কুষ্টিয়ার ট্রিপল মার্ডার সর্ম্পকে যা বললেন প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা !
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি,ওয়াহিদুজ্জামান অর্ক:
প্রকাশ্যে কুষ্টিয়া শহরের কাস্টম মোড় এলাকায় তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সৌমেনকে আটক করেছে পুলিশ।রবিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে শহরের ৬নং ওয়ার্ডের কাস্টমস মোড় এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের সাওতাকারিগর পাড়ার মিজবারের ছেলে শাকিল (২৮), আসমা (২৫) ও ছেলে রবিন (৫)। নিহত শাকিল একজন বিকাশ কর্মী ছিলেন।
এদিকে এলাকাবাসী ঘাতককে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে গেছে। আসমার পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, আসমার ৩টি বিয়ে হয়েছে। তার প্রথম স্বামীর ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আসমার দ্বিতীয় স্বামী রুবেলের ঘরের সন্তান নিহত শিশু রবিন । রুবেলের সাথে ছাড়াছাড়ির পরে ৪ বছর আগে এএসআই সৌমেনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠার পর বিয়ে হয়।
পুলিশ কর্মকর্তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, আটক পুলিশ কর্মকর্তা সম্প্রতি হালসা ক্যাম্প থেকে খুলনার ফুলতলাতে বদলি হন। তিনি আরোও বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্তকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পর পর তিনটি গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে বাইরে আসি। এসে দেখি শিশুসহ তিনজন মাটিতে পড়ে আছে। এর মধ্যে মা ও সাত বছরের ছেলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় শাকিলকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
স্থানীয়রা আরোও জানান, কাস্টম মোড়ে মসজিদের সন্নিকটে একটি গাছের নীচে দাঁড়িয়ে এই তিন জনকে আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।
একপর্যায়ে তারা দুইদিকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পাঁচ বছরের ছোট বাচ্চাকে নিয়ে পুরুষ লোকটি দৌড়ে মসজিদে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে বাচ্চাটিকে বের করে এনে প্রকাশ্যে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয়। এরপর কাছেই দাঁড়িয়ে থাকা শাকিলকে গুলি করে। নিজের সার্ভিস রিভলবার দিয়েই হত্যা কান্ড ঘটান এএসআই সৌমেন এবং করেন ১১টি গুলি ।
শিশুটির মা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তখন তাকেও গুলি করা হয় । সেই সময় অন্তত চারজন হামলাকারী ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পর পর তিনটি গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে বাইরে আসি। এসে দেখি শিশুসহ তিনজন মাটিতে পড়ে আছে। এর মধ্যে মা ও সাত বছরের ছেলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় শাকিলকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান ।
শাকিলের সহকর্মী জাফর বলেন, শাকিলের বাড়ি ও আমার বাড়ি কুমারখালীর শাওতা গ্রামে। সকালে অফিস থেকে বের হয়ে আমরা মার্কেটে যাই। তারপর জানতে পারি শাকিল খুন হয়েছে।
নিহত আসমার ভাই হাসান আলী বলেন, আমার আপু আসমার আগে দুই জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। নিহত রবিন তার দ্বিতীয় স্বামীর সন্তান। সৌমেন আমার আপুর তৃতীয় স্বামী। সৌমেনেরও একটি সংসার রয়েছে। সেই স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়েসন্তান রয়েছে। সৌমেন সংসার নিয়ে খুলনায় চাকরি করেন। আমার আপু আমাদের সঙ্গে কুষ্টিয়ার বাবরআলী গেট এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
তিনি আরোও বলেন, মাঝেমধ্যেই সৌমেন আমাদের বাসায় এসে থাকতেন। প্রায়ই আপুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও মারধর করতেন সৌমেন। কিছুদিন আগেও সৌমেন এসেছিলেন। সেদিনও মারধর করে চলে গেছেন খুলনায়।
নিহত আসমার মা হাসিনা খাতুন বলেন, পাঁচ বছর আগে সৌমেন কুমারখালী থানায় কর্মরত ছিল। সেই সময় আমরা একটি মামলায় পড়েছিলাম। সেই সূত্রে আমার মেয়ের সঙ্গে সোমেনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। পাঁচ বছর আগে আমার মেয়ের সঙ্গে সৌমেনের বিয়ে হয়। এরপর কর্মস্থল চেঞ্জ করে চলে যায়। প্রথম থেকেই আমার মেয়ে আমার সঙ্গে থাকত। মাঝেমধ্যে সে আমাদের বাড়িতে আসত এবং আসমাকে তার দেশের বাড়ি মাগুরার নিয়ে যেত এবং খুলনার ফুলতলায়ও নিয়ে যেত।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে সোমেন কুষ্টিয়ার হালশা ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের আসমার সাথে পরিচয় হয়। এরপর আসমার সাথে তার বিয়ে হয় বলে দাবী পুলিশের। পরে সোমেন (বর্তমান পোষ্টিং) খুলনার ফুলতলায় বদলি হলে আসমা তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আসমা তার বর্তমান বয়ফ্রেন্ড বিকাশ কর্মী সাকিলের সাথে সর্ম্পকে যুক্ত হলে ক্ষেপে যান সোমেন। এই বিরোধে সোমেন ক্ষিপ্ত হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ সোমেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করছে।
পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে। স্থানীয় জনতাও সেখানে ভীড় করছে। তারা প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধান করে দোষীর বিরুদ্ধে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার বলেন, আসমাকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে। বাকি দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিহতদের মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে এএসআই সৌমেন মিত্র আজ রোববার সকাল থেকে লাপাত্তা ছিলেন। সহকর্মীরা তার খোঁজ পাচ্ছিলেন না। তিনি ছুটিও নেননি। কুষ্টিয়ায় ট্রিপল হত্যায় আটক হওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। তিনি বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় আটক সৌমেন ফুলতলা থানার এএসআই। আজ সকাল থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছিলো না। তিনি ছুটি না নিয়ে আন অফিশিয়ালি কুষ্টিয়ায় গেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ফুলতলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাতাব শেখ জানান, ‘সকালে রোলকলের (হাজিরা) সময় এএসআই সৌমেন মিত্র অনুপস্থিত ছিলেন। তার নামে বরাদ্দ থাকা সরকারি পিস্তল ও গুলি নিয়ে তিনি বের হন। কিন্তু সৌমেন অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় থাকায় তারা কেউ তার মধ্যে এধরনের (হত্যার) বড় পরিকল্পনা কাজ করছে, সেটি বুঝতে পারেননি।’ সৌমেন মিত্র ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ফুলতলা থানায় কর্মরত আছেন বলে জানান ওসি। তার গ্রামের বাড়ি মাগুরা জেলায়।
ওসি মাহাতাব শেখ আরো জানান, হত্যাকাণ্ড ও আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে খুলনা জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানায় এসে সৌমেনের খোঁজ নেন। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ নিচ্ছেন- উল্লেখ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ করেন ওসি।
কুষ্টিয়ায় পুলিশ কর্মকর্তা এ এস আই সৌমেনের গুলিতে স্ত্রী,পুত্রসহ ৩ জন নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। রোববার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় করা এই মামলার বাদি হন নিহত শাকিলের বাবা। একমাত্র আসামি পুলিশের এএসআই সৌমেন রায়। এদিকে হত্যাকারী পুলিশের বিরুদ্ধে দুটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ সোমবার দিনের কোনো একসময় ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে আদালতে আনা হবে বলে জানা গেছে।
রোববার সকাল ১১টায় কুষ্টিয়া শহরের কাষ্টমস মোড়ে এই লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যেই ময়নাতদন্ত শেষে নিহতদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার পর তা নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে গেছেন । লাশ তিনটির ময়নাতদন্ত করেন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার।
তাপস কুমার সরকার সাংবাদিকদের জানান, তিনজনকে দুটি করে ছয়টি গুলি করা হয়েছে। প্রত্যেকের মাথায় কাছ থেকে গুলি করা হয়েছে। প্রথমে শাকিল খানের ময়নাতদন্ত করা হয়। তার মাথার বাম পাশে গুলি করা হয়েছে। এ ছাড়া তার ডান পায়ের ঊরুতে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এরপর আসমা খাতুনের ময়নাতদন্ত করা হয়। আসমার মাথা ও গলায় গুলির চিহ্ন রয়েছে।
সবশেষে শিশু রবিনের (৬) ময়নাতদন্ত করা হয়। রবিনের মাথায় ও পিঠে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তবে কারোর দেহেই গুলি পাওয়া যায়নি। গুলিগুলো শরীর ভেদ করে বাইরে চলে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, রবিনকে দৌড়ে পালানোর সময় পেছন থেকে পিঠে গুলি করা হয়। এরপর পড়ে গেলে তার মাথায় গুলি করা হয়।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনটি হত্যাকাণ্ডে সৌমেন ১১ রাউন্ড গুলি খরচ করেছেন। তার কাছ থেকে একটি গুলি ও একটি পিস্তল উদ্ধার হয়েছে। সৌমেন রোববার ভোরে ফুলতলা থানা থেকে ওয়ারেন্ট আসামি ধরার কথা বলে দুটি কার্তুজসহ বের হয়ে কুষ্টিয়ায় আসেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়। তবে সে কোন প্রকার ছুটি না নিয়ে খুলনা থেকে কুষ্টিয়া আসেন এমন তথ্যও পাওয়া গেছে।
এদিকে কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় আটক এএসআই সৌমেন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার বিকেলে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় খুলনা রেঞ্জ ও খুলনা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা যায়। খুলনা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় গঠিত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) তানভীর আহমেদ। অন্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) মো. খায়রুল আলম ও জেলা বিশেষ শাখার ডিআইও-১ শেখ মাসুদুর রহমান। কমিটি সাত কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এ ছাড়া খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে রেঞ্জ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদকে। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন ও কুষ্টিয়া ডিআইও-১ ফয়সাল হোসেন। রোববার বিকেল পরিদর্শনকালে খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (এডমিন) এ কে এম নাহিদুল ইসলাম জানান, সৌমেন রায়কে শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করবে। দুই কার্য দিবসে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করা হবে।
খুলনা জেলার পুলিশ সুপার মাহবুব রহমান সাংবাদিকদের জানান, ঘটনা জানার পর সৌমেন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে সর্বশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে। রোববার সন্ধ্যায় এ শাকিলের পিতা মেজবার রহমান কুষ্টিয়া মডেল থানায় সৌমেন রায়কে একমাত্র আসামি করে মামলার এজাহার উল্লেখ করেছেন। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম জানান, একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে মামলার বাদি নিহত শাকিলের পিতা। অভিযুক্ত সৌমেনের গ্রামের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার গ্রামে। সেখানে তার পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিহত আসমা খাতুনের সঙ্গে সৌমেনের দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি তার পরিবার বা শ্বশুরবাড়ির পরিবারের কেউ জানত না।
এএসআই সৌমেন রায়ের ভাই জানান, সৌমেন পারিবারিকভাবে ২০০৫ সালে পাশের গ্রামে বিয়ে করেন। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তিনি খুলনায় থাকেন। ওই স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো নারীর সাথে সৌমেনের বিয়ের বিষয়টি তাদের জানা ছিল না।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় স্ত্রীর বিষয়টি আমরা খবরে দেখেই প্রথম জেনেছি। এমনকি বিষয়টি সে তার স্ত্রীকেও জানায়নি। আমরা সবাই আজ প্রথম জানলাম। আমাদের ধারণা কুষ্টিয়ায় কর্মরত অবস্থায় হয়তো আসমার সাথে সম্পর্কে জড়ায় সে’।
তিনি জানান, অল্প বয়সে বাবা মারা যাওয়ার পর সৌমেনের হাত ধরে তাদের দরিদ্র পরিবারটি ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। সৌমেনের পরিবারের লোকজনের আরো জানা যায়, তার বাবা অনেক বছর আগে মারা যান। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সৌমেন মেজ। পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর ২০০৫ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। ওই পরিবারে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া একটি মেয়ে ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ুয়া একটি ছেলে রয়েছে। সুখের সংসার ছিল সৌমেনের। তবে দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে কিছুই জানা ছিল না তাদের।
সৌমেন ২০০৪ সালে পুলিশ কনষ্টাবল পদে যোগদান করেন। ২০১৭ সালে পদোন্নতি পেয়ে এএসআই হয়ে কুষ্টিয়ায় পোষ্টিং নেন। কুষ্টিয়ার কুমারখালী, মিরপুর ও ইবি থানাধীন বিভিন্ন ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করেন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় থাকাকালীন একটি মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আসমা থানায় এলে সেখান থেকেই পরিচয় এবং পরে তা পরিণয়ে রূপ নেয়। আসমা ধর্মান্তিত হয়ে নাম পরিবর্তন করে হয় আঁখি। তাদের সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু সৌমেন কুষ্টিয়া থেকে খুলনায় বদলির পর থেকেই আসমার সাথে সৌমেনের মনমালিন্য চলছিল। এরই মাঝে শাকিলের সাথে পরিচয় আর বন্ধুত্বও বিষয়টি নিয়ে চটে যান সৌমেন।
এদিকে আসমার এলাকার মানুষেরা জানান, সৌমেনের সাথে বিয়ের আগে আরো দুটি বিয়ে হয়। নিহত শিশু রবিন তার দ্বিতীয় স্বামী রুবেলের সন্তান। শিশুসহ ৩ খুনের খটনার নেপথ্যে পরকীয়া না কি ভিন্ন কোন চক্রান্তে তাদের খুন করা হয়েছে এ নিয়েও নানা আলোচনা সমালোচনা গুঞ্জন চলছে।